চুলে থাকুক ফুলের সাঁজ
ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে বহে কিবা মৃদু বায়।।
তটিণী-র হিল্লোল তুলে কল্লোলে চলিয়া যায়।
পিক কিবা কুঞ্জে কুঞ্জে।।
ঋতুচক্রে বছর ঘুরে বসন্ত আসে। বাংলা পঞ্জিকা বর্ষের শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিনে পালিত হয় ‘পহেলা ফাল্গুন-বসন্ত উৎসব’। বসন্ত মানেই ফুলেল উৎসব, বাসন্তিরঙা শাড়ি। শুধু কি তাই! বসন্ত মানেই তো রঙের সমাহার। বাসন্তী রঙের শাড়ি পড়ে তরুণী ও নারীরা ঘর থেকে বের হন। কাল পহেলা ফাল্গুন আর ফাল্গুনের দ্বিতীয় দিনই আবার ভালোবাসা দিবস। তাই ফাল্গুনের সাজে রঙের ছোঁয়ায় রাখুন ফুলের বাহার। শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া যা-ই পরা হোক না কেন, প্রকৃতির রঙে নিজেকে সাজাতে বসন্তের উজ্জ্বল রংগুলোর সাথে চুলের সাজে বসন্তের ফুলের ব্যবহার নিয়ে আসবে একটু ভিন্ন মাত্রা। চলুন জেনে নেই চুলের সাজে ফুলের ব্যবহারঃ
 |
ছবিঃ সংগৃহীত |
বসন্তের ফুলঃ রঙিন ফুলের ভিড়ে হলুদ গাঁদা মন কাড়বেই। কিন্তু অন্য ফুলগুলোও নজর কাড়তে কম যায় না। হলুদ গাঁদা ছাড়াও মেরুন, হলুদ, সাদা, নীল রঙের চন্দ্রমল্লিকা, ক্যালানডুলা ফুলগুলোর চাহিদা থাকে পয়লা ফাল্গুনের সাজে অনেক বেশি। এছাড়া হলুদ-লাল রঙের চায়নিজ চেরিও তাল মেলাচ্ছে অন্যদের সঙ্গে। বসন্ত উৎসবে আরও পরা যায় গ্ল্যাডিওলাস, রজনীগন্ধা, জারবারা। এছাড়া গাঁদা, গোলাপ আর অর্কিড তো থাকছেই।
খোলা চুলের দোলাঃ উৎসবে চুল খোলা রাখতে পছন্দ করেন অনেকেই। এ ক্ষেত্রে একপাশে ক্লিপ আটকে তার ওপর ফুল গুঁজে দিতে পারেন। অথবা কানের পাশ দিয়ে হালকাভাবে গুঁজে দিতে পারেন কয়েকটি ফুল। ফুল বড় হলে একটি, ছোট হলে তিন-চারটি। চাইলে সামনের দিকের কিছুটা চুল ব্যাককোম্ব করে নিতে পারেন। পেছনে চুল আটকানোর জায়গাটিতে আটকে দিতে পারেন পছন্দের ফুলটি। দুই পাশ থেকে চুল পেঁচিয়ে এনেও (টুইস্ট) পুরো চুল খোলা রাখতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দুল ও মেকআপের সঙ্গে মিলিয়ে সঠিক জায়গায় ফুলটিকে আটকে নিন।
এছাড়াও খোলা চুলে ভালো লাগবে ফুলের ব্যান্ড। চারদিকে ফুল না দিয়ে একটু ভিন্নভাবে গড়ে নিন ফুলের ব্যান্ড। ব্যান্ডের দুই পাশে অথবা যেকোনো এক পাশে ফুল গুঁজে আর বাকি অংশটা চেইন, রঙিন কাপড় অথবা ফিতা দিয়ে জড়িয়ে নিতে পারেন। ফুলের ব্যান্ডে ছোট ছোট ফুল ব্যবহার করলে বেশি ভালো লাগবে। বসন্তে ছোট আকৃতির চন্দ্রমল্লিকা, ক্যালেন্ডুলা আর গোলাপও পাবেন।
 |
ছবিঃ সংগৃহীত |
খোঁপা অথবা বেণিতেঃ হালকা অথবা অাঁটসাঁট করে খোঁপাও করে নিতে পারেন। খোঁপার চারপাশ দিয়ে মালা না পেঁচিয়ে একটু অন্যভাবেও পরতে পারেন। খোঁপার চারপাশ দিয়ে পরপর ছোট ফুল গেঁথে নিন অথবা একটি বড় ফুল খোঁপা ও কানের মধ্যে আটকে নিন। বেণিতেও অন্যভাবে ফুল আটকে তৈরি করতে পারেন ভিন্ন লুক। সামনে দুই পাশ থেকে চুল টুইস্ট করে টেনে পেছনে নিয়ে আটকে নিন ক্লিপ দিয়ে। এবার সাধারণভাবে বেণি করে মাঝেমধ্যে ফুল আটকে নিতে পারেন। সামনের টুইস্ট করা অংশেও ছোট ফুল আটকে নিতে পারেন।এছাড়া বতর্মানে কাঁচা ফুল দিয়ে বানানো যে ফুলের ব্যান্ড পাওয়া যায় সেটিও পরতে পারেন। পুঁতি আর ফুল দিয়ে চেইনের মতো বানিয়ে মাথার এক পাশ থেকে শুরু করে পুরো বেণিতে বেঁধে নিতে পারেন।
চুলে তাজা ফুলের ব্যবহার তো আপনাকে রঙিন করেই। তবে তারও আগে বাছাই করে নিতে হবে বসন্তের পোশাকটা। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে ফুল ব্যবহার করতে। যেমন পোশাকে হলুদ গোলাপের নকশা থাকলে চুলে গুঁজতে পারেন ছোট ছোট হলুদ গোলাপ। যেহেতু বসন্তের পোশাক আর সাজে রঙের একটা প্রভাব থাকে, তাই নখেও ফুল আর পোশাকে থাকা রঙের ছোঁয়া দেওয়া ভালো। ম্যাট অথবা গ্লসি একরঙা নেইল পলিশ ব্যবহার করতে পারেন। চুল যে রঙের ফুলের আধিক্যে সাজাবেন, সেই রঙের নেইল পলিশ ভালো লাগবে। এ ছাড়া পোশাকের প্রধান রঙের সঙ্গে মিলিয়েও নেইল পলিশ ব্যবহার করা যাবে। তবে ফুলের রঙের মিল আনবে ভিন্নতা।
No comments:
Post a Comment