ডায়েট করার কিছু জাদুকরী কৌশল
অনেক দিন ধরে ভাবছেন ডায়েট শুরু করবেন, কিন্তু পারছেন না। আবার নানান ঝামেলা করে শুরু করলেন ডায়েট। কিন্তু খাবার দেখলে ভুলে যাচ্ছেন ডায়েটের কথা। যারা খেতে পছন্দ করে, তাদের জন্য খাবার কম খাওয়াটা বেশ কষ্টকর। এধরনের মানুষের খাবারের প্রতি একধরনের আসক্তি কাজ করে। যার কারণে খাবার খাওয়া ছাড়তে পারে না আর ওজন বৃদ্ধি পেতে থাকে দ্রুত। কম খাওয়া কাজটা সহজ করা সম্ভব রুচি নিয়ন্ত্রণ করে। রুচি নিয়ন্ত্রণ করা কিছুটা কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। খাওয়ার রুচি কমাতে চাইলে সর্বপ্রথম নিজের মন বা ইচ্ছাকে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মন নিয়ন্ত্রণের সাথে কিছু কৌশল মেনে চললে খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে এবং ওজনটাকে কমিয়ে রাখা যাবে।
চলুন জেনে নেয়া যাক ডায়েট করার কিছু কৌশলঃ১। ডায়েট প্ল্যান নিয়ে গবেষণা
ডায়েট করার আগে জেনে নিন ডায়েট আসলে কী? কত ধরণের ডায়েট হয়, কোন ডায়েটের কী উপযোগিতা, ডায়েটের কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কি না ইত্যাদি বিষয়। প্রযোজনে তথ্য নিন ইন্টারনেট থেকে বা বই পড়ুন।
২। লক্ষ্য নির্ধারণ করা
আপনি কেন ডায়েট করছেন এবং কতটুকু ওজন কমাতে চাচ্ছেন ডায়েটের মাধ্যমে প্রথমে তা নির্ধারণ করুন। ডায়েট শুরুর আগে যদি এটি নির্ধারণ করে নিতে পারেন তবে আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে সহজেই পৌঁছাতে পারবেন।
৩। ডায়েট প্ল্যান
সব সময় চেষ্টা করবেন প্রথম দিকে সহজ কোন ডায়েট চার্ট বেছে নেওয়ার। এতে করে শরীরের কোন জটিলতা দেখা দেয় না। হঠাৎ করে জটিল কোন ডায়েট শুরু করলে শরীরের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
৪। পুষ্টিকর খাবার
আপনি যে ডায়েট চার্ট অনুসরণ করুন না কেন খেয়াল রাখবেন ডায়েট চার্টে যেন পুষ্টিকর খাবার থাকে। ডায়েট চার্টে অবশ্যই যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে শাক সবজি, ফল থাকে।
 |
ডায়েট করার সময় খাওয়ার ব্যাপারে সৎ থাকুন। ছবি: সংগৃহীত |
৫। পানি পান
অধিকাংশ মানুষের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে, ক্ষুধা অনুভব করে। তাই ক্ষুধা অনুভব হলে পানি পান করুন। পানি অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত রাখবে। খাবার খাওয়ার আগে এক গ্লাস পানি পান করুন। এতে খাবার কম খেলেও পেট ভরা থাকবে।
৬। ব্যায়াম করুন
আপনি মনে করতে পারেন ব্যায়াম আপনাকে ক্ষুধার্ত করে। কিন্তু এটি ভুল ধারণা। বরং ব্যায়াম খাওয়ার রুচি কমিয়ে থাকে।
৭। সকালে নাস্তা করুন
সকালে ভারী নাস্তা করুন। এটি মধ্যাহ্ন সময়ের ক্ষুধা লাগার প্রবণতা কমিয়ে দেবে। সকালের খালি পেট আপনার রক্ত শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় যা আপনাকে ক্ষুধার অনুভব দিয়ে থাকে।
৮। প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার রাখুন
প্রতিদিনকার খাদ্যতালিকায় শর্করার তুলনায় প্রোটিন বেশি পরিমাণে রাখুন। চিনি বা চিনি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। যত বেশি চিনি বা চিনি জাতীয় খাবার আপনি খাবেন তত বেশি ক্ষুধা অনুভব করবেন। চিনি আপনার রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় যা আপনার ক্ষুধা বাড়িয়ে দেবে।
৯। ধীরে ধীরে খান
দ্রুত খেলে আপনি বেশি পরিমাণে খেয়ে ফেলবেন। পেটে খাবার হজম হওয়ার আগে খাওয়া হলে খাবার হজম করার সময় পায় না। যা পরবর্তী সময়ে ক্ষুধার উদ্ভব করে থাকে। কমপক্ষে ২০ মিনিট সময় নিয়ে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন।
১০। ছোট প্লেটে খাবার খান
প্লেটের আকৃতি আপনার খাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করবে। চেষ্টা করুন ছোট প্লেটে খাবার খাওয়ার। গবেষণায় দেখা গেছে ছোট প্লেট অথবা পাত্রে খাবার বেশি মনে হয় এবং খাওয়া কম হয়।
১১। সৎ থাকুন
খাওয়ার সময় টেভি দেখা অথবা ভিডিও গেইম খেলা থেকে বিরত থাকুন খাবার খাওয়ার সময় খাওয়ার দিকে মন দিন। টেলিভিশন বন্ধ রাখুন এবং এমনকি আপনার স্মার্টফোনটিকেও দূরে রাখুন। টেলিভিশন অথবা ভিডিও গেইম আপনার খাওয়ার মনোযোগ নষ্ট করে দেয়। আর আপনি বেখেয়ালে বেশি খাবার খেয়ে ফেলেন। আপনি যদি অফিসে থাকেন তো ডেস্কে খাবার খাবেন না। মন খারাপের সময় কিংবা দুশ্চিন্তার সময় যদি আপনি অনেক বেশি খাবার খেয়ে থাকেন, তাহলে রুচি কমানোর সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি বৃথা যাবে। তাই খাবারের বেলায় নিজের প্রতি সৎ থাকুন আর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করুন।
১২। চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ
ডায়েট শুরু করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটা অত্যন্ত প্রয়োজন। কারণ আপনার শরীরের চাহিদা অনুযায়ী, আপনার বেছে নেওয়া ডায়েট উপযোগী কি না তা একজন চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদ ভাল বলতে পারবেন।
No comments:
Post a Comment