চুল পড়ার কারণসমুহ
চুল নারীদের রূপের অনেকটাই দখল করে রাখে। আর চুল পড়া তো তাদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো। ক্লান্তি, অবসাদ, ভুল ডায়েটসহ বিভিন্ন কারণে খুব কম বয়সেই চুল পড়তে পারে। বিশেষজ্ঞরা স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন গড়ে মানুষের একশোটির মতো চুল পড়ার কথা বলে থাকেন। কিন্তু এর চেয়ে বেশি পড়লে সেটি চিন্তার কারণ হতে পারে।অতিরিক্ত চুল পড়ার লক্ষণ দেখা দিলে আগে থেকেই সতর্ক হতে হবে। শুরু থেকেই যত্ন না নিলে কিন্তু মাথায় টাক পড়তে বেশি সময় লাগবে না। সঠিক কারণগুলি জানা থাকলে তবেই আপনি চুল পড়ার সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন। এবার জেনে নেয়া যাক, কি কি কারণে আপনি চুল পড়া সমস্যায় ভুগতে পারেন।
![]() |
চুল পড়তে পারে আপনার অভ্যাসের কারনেও। ছবিঃ সংগৃহীত |
* অতিরিক্ত মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগের কারণেও চুল পড়ে। এছাড়া হঠাত্ করে কঠিন খাদ্য নিয়ন্ত্রণ শুরু করলেও চুল পড়ে।
* ক্লান্তি ধীরে ধীরে আমাদের শরীরের নানা ক্ষতি করে। চুল পড়াতেও অনুঘটক হিসাবে কাজ করে শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি।
* মাতৃত্বের কারণে অনেক নারীরই চুল পড়ার সমস্যায় ভোগেন। যদিও বেশিরভাগ মায়েদের ক্ষেত্রেই সন্তান জন্মের তিনমাস পর মাথায় ফের চুল গজায়। তবে কারো কারো সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।
* ভুল ডায়েট এবং অতিরিক্ত ওজন হ্রাস চুল পড়ার অন্যতম কারন।
* শরীরে ভিটামিন এ-র অভাব হলে তা মাথার চুল ঝরতে শুরু করে।
* চুল পড়ে যাওয়া বা টাক পড়ার পেছনে বংশগত কারণও থাকে। বংশে টাকের প্রবণতা থাকলে অতিরিক্ত চুল পড়তে পারে। তেমন শতাংশে অনেক কম।
* প্রোটিন শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। শরীরে প্রোটিনের অভাব হলেই চুল পড়ার সমস্যা হয়।
* বেশি ঠান্ডা বা গরম পানি ব্যবহার করলে চুল পড়তে পারে। শীতে কুসুম গরম পানি চুলের জন্য ভালো। কিন্তু প্রতিদিন চুলে গরম পানি ব্যবহার করা ভালো নয়। গরম তাপ চুলের আগা ভেঙ্গে ফেলে। এছাড়া চুলের প্রাকৃতিক তেল ধুয়ে চুলকে রুক্ষ শুষ্ক করে তোলে।
* হরমোনের কারণে অনেকের হরমোনজনিত কারণে কমবয়সে চুল পড়ে যায়।
* শরীরে আয়রনের ঘাটতি বা রক্তশূন্যতা হলে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা হয়। চুল পড়া ছাড়াও চামড়া খসখসে হওয়া, উজ্জ্বলতা হারানো, দুর্বলতা, মাথাধরা ইত্যাদি সমস্যা হয়।
* থাইরয়েডের সমস্যা হলে চুল পড়ার পাশাপাশি মাংসপেশিতে টান, শরীরের ওজন বেড়ে যায়।
* ভিটামিন বি-র অভাবেও চুল পড়তে পারে। শরীরে ভিটামিনের ঘাটতি কমাতে ডিম, শাক-সবজি ও মাছ খেতে হবে প্রচুর পরিমাণে।
* আবহাওয়ার পরিবর্তন চুল পড়ার অন্যতম কারন। তাই এতে না ঘাবড়ে সঠিকাভাবে যত্ন নিলে ঠিক হয়ে যাবে।
* থাইরয়েডের সমস্যা, টাইফয়েড জ্বর এবং কিছু দীর্ঘমেয়াদী রোগে চুল পড়া বৃদ্ধি পেতে পারে।
* মাথায় ছত্রাকের সংক্রমণ, খুশকি, অপুষ্টি, রক্তশূন্যতা ও ভিটামিনের অভাবে চুল পড়তে পারে।
* বেশিমাত্রায় শরীরচর্চা করাও চুল পড়ায় ইন্ধন যোগায়।
* মেডিকেসন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া অভ্যাস করলে, কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় চুল পড়ে যায়।
* বয়স বাড়ার সাথে সাথে চুল পড়ার হার বাড়াটাই স্বাভাবিক। বিশেষ করে ৪০ বছর বয়সের পর নারীদের হরমোনের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলে চুল পড়া বৃদ্ধি পায়। আর পুরুষদের এন্ড্রোজেন হরমোনের প্রভাবে স্বাভাবিক ভাবেই টাক পড়ার প্রবণতা বেশি থাকে। কারো কম, কারো বা বেশি।
* ভেজা চুল আঁচড়ানোর বাজে অভ্যাস অনেকের রয়েছে। অভ্যাসের কারণে অনেকেই গোসল শেষে ভেজা চুল আঁচড়ে ফেলেন। এতে করে চুলের গোঁড়া নরম হয়ে যায় একেবারে। এবং চুলের জট ছাড়াতে গিয়ে চুলের ফলিকল নষ্ট হয়। ফলে অনেক বেশি মাত্রায় চুল পড়া শুরু হয়।
* চুল পরিষ্কার করার জন্য শ্যাম্পু করার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত শ্যাম্পু চুলের জন্য ক্ষতিকর। অতিরিক্ত শ্যাম্পু চুল থেকে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার দূর করে এবং চুল করে তোলে রুক্ষ, শুষ্ক। সপ্তাহে তিনবার চুল শ্যাম্পু করার ভালো। যদি আপনার অনেক বেশি ঘাম হয় তবে দুই দিন পর পর শ্যাম্পু করতে পারেন।
* অনেকে মনে করেন শক্ত করে চুল বাঁধা চুলের জন্য ভালো। এতে চুল দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এটি একটি ভুল ধারণা, শক্ত করে চুল বাঁধার ফলে চুলের ফলিকল অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। পরবর্তীতে এই ক্ষতির কারণে নতুন করে চুল গজানো বন্ধ হয়ে যায়।
* হেয়ার ড্রাইয়ার, ব্লো ড্রাই, স্ট্রেইনার ইত্যাদি ব্যবহার করাও চুল পড়ার অন্যতম কারণ। প্রতিদিন হেয়ার স্টাইল করার পরিবর্তে মাঝে মাঝে হেয়ার স্টাইল করুন। এমনকি ঘন ঘন চুল রং করাও চুলের জন্য ক্ষতিকর।
No comments:
Post a Comment