দশমীর ১২ পদ রান্না
 |
দশমীর ১২ পদ রান্না। ছবিঃ সংগ্হীত |
কাজু, কিসমিস পোলাও
উপকরণঃ বাসমতি চাল ৫০০ গ্রাম, মটরশুটি ৫০০ গ্রাম, কাঁচামরিচ ৪টি, কাজুবাদাম ১০০ গ্রাম, কিসমিস ১ টেবিল চামচ, দুধ ১/২ কাপ, তেজপাতা ২টি, জায়ফল গুঁড়ো ১ চা চামচ, দারচিনি ২ ইঞ্চি, ছোট এলাচ ৪টি, লবঙ্গ ৪টি, ঘি ৫০ গ্রাম, লবন স্বাদমতো, চিনি৩ চা চামচ।
 |
কাজু , কিসমিস পোলাও |
প্রণালীঃ চাল ধুয়ে জল ঝরিয়ে শুকিয়ে নিন। মটরশুটি সেদ্ধ করে একটু ভেজে তুলে রাখুন। এবারে কড়াইতে ঘি গরম করে তেজপাতা, লবঙ্গ, এলাচ, দারচিনি ফোড়ন দিয়ে এর মধ্যে চাল দিয়ে অল্প নেড়েচেড়ে সুন্দর গন্ধ বেরোলে চালের দ্বিগুণ পরিমান জল লবন দিয়ে, চাপা দিয়ে সেদ্ধ হতে দিন। জল শুকিয়ে আসতে থাকলে মটরশুটি, কাজু, কিসমিস, চিনি ও কাঁচামরিচ চেরা দিয়ে আঁচ কমিয়ে দমে রাখুন। জল শুকিয়ে চাল ঝরঝরে হয়ে গেলে উপরে অল্প ঘি ছড়িয়ে আঁচ বন্ধ করে চাপা দিয়ে রাখুন।
নবরত্ন শুক্তো
উপকরণঃ করল্লা ১ টি, কাঁচা পেঁপে ১/২ টি, কচু ১০০ গ্রাম, কাঁচকলা ২টি, বেগুন ১টি, আলু ২ টি, পটল ৩টি, বড়বটি ২৫ গ্রাম, ডালের বড়ি ১০ টি, কাঁচামরিচ ৫ টি, পাঁচপোড়ন ১ চামচ, ঘি ১ চা চামচ, তেজপাতা ২টি , শুকনো মরিচ ২টি, আদাবাটা ১ চামচ, সরষে ১ ১/২ চা চামচ, ধনেগুড়ো ১ চা চামচ, মৌরি ১চামচ, দুধ ১ ১/২ কাপ, চিনি ৩ চা চামচ, লবন স্বাদমত, তেল পরিমানমতো।
 |
নবরত্ন শুক্তো |
প্রণালীঃ সবগুলি সবজি লম্বা লম্বা করে কেটে ধুয়ে রাখুন। প্রথমে শুকনো কড়াইয়ে হাফ চামচ পাঁচপোড়ন ভেজে গুড়ো করে রাখুন। কড়াইয়ে তেল দিয়ে করল্লা ও বড়ি আলাদা করে ভেজে রাখুন। তারপর ওই তেলের সঙ্গে আন্দাজমতো আরও একটু তেল মিশিয়ে সব সবজি গুলো দিয়ে ভেজুন। ভাজা হয়ে গেলে আদাবাটা, ধনে, সরষে, মৌরি দিয়ে ভাল করে কষান। কষা হয়ে গেলে জল দিয়ে ঢেকে দিন। জল ফুটে উঠলে চিনি দিয়ে দিন। সবজি গুলি সেদ্ধ হয়ে গেলে নামিয়ে রাখুন। এবার অন্য একটি পাত্রে ঘি গরম করতে দিন। গরম হয়ে গেলে পাঁচপোড়ন ও শুকনো মরিচ ফোড়ন দিন। মশলার গন্ধ বেরোলে সেদ্ধ সবজি ও ভেজে রাখা উচ্ছে ও বড়ি দিয়ে দিন। ভালো করে নেড়ে দুধ ঢেলে দিন। নামানোর আগে গুড়ো করে রাখা পাঁচপোড়ন দিন।
লাবড়া
উপকরণঃ আলু, করলা, বরবটি, পটল, বেগুন, ফুলকপি, মিষ্টিকুমড়া, বাঁধাকপি ও শিম সবগুলো পরিমানমত, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ ৬টি, তেজপাতা ১টি, পাঁচফোড়ন ১/২ চামচ, ঘি ১ চামচ, লবন, তেল পরিমাণমতো।
 |
লাবড়া |
প্রণালীঃ আলু, করলা, বরবটি, পটল, বেগুন, ফুলকপি, মিষ্টিকুমড়া, বাঁধাকপি, শিম কেটে নিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। কড়াইতে তেল গরম করে পাঁচফোড়ন দিয়ে সব সবজি ঢেলে দিয়ে নাড়তে হবে।এবার আদাবাটা, তেজপাতা, লবণ, হলুদ ও কাঁচামরিচ দিয়ে নাড়তে থাকুন। সবজি সিদ্ধ হয়ে আসলে ঘি দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
কচুশাকের ঘণ্ট
উপকরণঃ কচুশাক, থোড় , নারকেল কোড়া, আদাবাটা, গোলমরিচ বাটা, তেজপাতা, শুকনোমরিচ, হলুদ, চিনি, তেল, লবন।
 |
কচুশাকের ঘন্ট |
প্রণালীঃ কচুশাক ও সামান্য থোড় কেটে আলাদা ভাবে সেদ্ধ করে, ভাল করে জল ঝরিয়ে নিন। এবার ২ টো চটকে মেখে নিন। তেল গরম করে জিরে, তেজপাতা ও শুকনোমরিচ ফোড়ন দিয়ে কচুশাক ও থোড় মাখা মিশিয়ে ভাল করে কষে নিন।এবার লবন, হলুদ ও চিনি দিয়ে নারকেল কোড়া মেশাতে দিন। স্বাদে মিষ্টিভাব বেশি হবে।
পনিরের তরকারি
উপকরণঃ পনির, আলু, পেঁপে, গাজর, পটোল, তেজপাতা, কালোজিরা, কাঁচামরিচ, নারকেল, সামান্য হলুদগুড়া, চিনি, তেল, লবন।(প্রতিটির পরিমান আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী)
 |
পনিরের তরকারি |
প্রণালিঃ সবজিগুলো ধুয়ে বড় বড় করে কেটে হলুদগুড়া ও লবনসহ কড়াইতে দিয়ে অল্প তেলে হাল্কা ভেজে নিন। এরপর পনিরের টুকরা ছোট ছোট করে কেটে তেলে ভেজে নিতে হবে। এগুলো আলাদা বাটিতে উঠিয়ে রেখে কড়াইয়ে তেল ও ঘি একসঙ্গে দিয়ে তেজপাতা, সামান্য কালোজিরা, কাঁচামরিচ দিয়ে ফোড়ন দিন। এরপরে আগে থেকেই নারকেল বাটা দিয়ে ভালোভাবে কষিয়ে নিতে হবে। কষানো শেষে পনিরের টুকরাসহ সব উপকরণ কড়াইয়ের মধ্যে ঢেলে দিন। কিছুক্ষন রান্না করুন। তৈরি হয়ে গেল পনিরের তরকারি।
শাপলা দিয়ে চিংড়ি মাছের তরকারি
উপকরণঃ শাপলা ১/২ কেজি, মাঝারি সাইজের চিংড়ি মাছ দেড় কাপ, কাঁচামরিচ ফালি ৫টি, আদা ও রসুনবাটা ১ টেবিল চামচ, হলুদগুঁড়ো ১ চা চামচ, কালোজিরা ১/২ চা চামচ, শুকনোমরিচ ২ টি, লবণ স্বাদমত, তেল ১ কাপ।
 |
শাপলা চিংড়ি |
প্রণালীঃ প্রথমে শাপলার আঁশ ছাড়িয়ে এক ইঞ্চি সমান কেটে ভালো করে ধুয়ে ভাপিয়ে নিতে হবে। এবার কড়াইতে তেল গরম করে কালোজিরা ফোড়ন দিয়ে আদা-রসুন-জিরা বাটা, হলুদগুঁড়ো, লবণ ও সামান্য পানি দিয়ে পাঁচ মিনিট কষান। এরপর চিংড়ি দিয়ে আর একটু কষিয়ে পানি শুকিয়ে তেল উপরে উঠলে ভাপিয়ে রাখা শাপলা আর কাঁচামরিচ দিয়ে দিন। তারপর আঁচ বাড়িয়ে শাপলা ভাজতে হবে পানি না শুকানো পর্যন্ত। চাইলে ঝোল ও রাখতে পারেন। হয়ে গেলে নামিয়ে তেল গরম করে শুকনো মরিচ ভেঙ্গে তেলে ছেড়ে দিন। একটু নাড়াচাড়া করে শাপলায় ফোঁড়ন দিন।
রুই মাছের মালাই কোপ্তা
উপকরন-১ঃ রুই মাছের কিমা ২ কাপ, কাচামরিচ কুচি ২ টেবিল চামচ, ধনেপাতা কুচি ২ টেবিল চামচ , জিরা গুঁড়া ১/২ চা চামচ লবন পরমানমতো।
উপকরন-২ঃ আদা বাটা ১/২ চা চামচ, রসুন বাটা ১/২ চা চামচ, মরিচ গুঁড়া ১/২ চা চামচ,হলুদ গুঁড়া ১/২ চা চামচ, টমেটো পিউরি ১/২ কাপ, টমেটো সস ১/২ কাপ, জিরা গুঁড়া ১/২ চা চামচ , লবন পরিমান মত, নারিকেলের দুধ ১ কাপ।
 |
রুই মাছের মালাই কোপ্তা |
প্রনালিঃ প্রথমে উপকরন-১ এর সব একত্রে মেখে কোপ্তার আকারে করে নিয়ে ডুবো তেলে লাল করে ভেজে তুলুন। ওই তেলে উপকরন-২ এর আদা বাটা ,রসুন বাটা দিয়ে একটু ভেজে হলুদ ও মরিচ গুঁড়া দিন। এরপর টমেটো পিউরি দিয়ে নেড়ে একটু কষান। এবার টমেটো সস, জিরা গুঁড়া ও লবন দিয়ে কিছুক্ষন কষাতে হবে। এরপর কোপ্তাগুলো ও নারকেলের দুধ দিয়ে নেড়ে ঢেকে দিন ৫ মিনিটের জন্য। এবার ঢাকনা খুলে কাচামরিচ ফালি ও ধনে পাতা কুচি দিয়ে আরো ১ মিনিটের মত রাখতে হবে। তেল উপরে উঠে এলে নামিয়ে সার্ভিং ডিশে ঢেলে নিন ।
সরষে ইলিশ
উপকরণঃ ইলিশ মাছ ১টি, সরষেবাটা ১ কাপ, কাঁচামরিচ১০টি, তেজপাতা ২ টি, জিরা ১/২ চা চামচ, আদাবাটা ১চা চামচ, রসুনবাটা ২ চা চামচ, হলুদগুঁড়া২ চা চামচ, চিনি ৩ চা চামচ, লবণ, তেল পরিমাণমতো।
 |
সরষে ইলিশ |
প্রণালীঃ প্রথমে ইলিশ মাছ টুকরা করে ধুয়ে সামান্য হলুদ ও লবণ মাখিয়ে রাখুন। একটি প্যানে তেল গরম এর মধ্যে জিরা ও তেজপাতা দিয়ে এক এক করে বাটা মসলা ও গুঁড়া মসলা দিয়ে কষিয়ে নিন। এবার এর মধ্যে মাছের টুকরোগুলো দিয়ে এক কাপ পানি দিয়ে চুলার জ্বাল মাঝারি আঁচে রেখে সরষে
বাটা দিয়ে ভালো করে নাড়ুন। সরষে বাটা ঘন হয়ে এলে কাচামরিচ, চিনি দিয়ে কিছুক্ষন রেখে নামিয়ে
গরম গরম পরিবেশন করুন সুস্বাদু সরষে ইলিশ।
মুরগির কষা মাংস
উপকরণঃ মুরগির মাংস ১ কেজি, পেঁপে বাটা ২ টেবিল চামচ, আদাবাটা ১ টেবিল চামচ, কাঁচামরিচ ১০টি, রসুন কুচি 8 কোয়া, কাশ্মীরী লঙ্কারগুঁড়ো আন্দাজমতো, মরিচগুড়ো ২চামচ, জিরে বাটা ১ টেবিল চামচ, টমেটো কুচি ২ টি, দারচিনি , ছোট এলাচ ও লবঙ্গ থেঁতো করা আন্দাজমতো, চিনি , হলুদ ও সরষের তেল, সয়াবিন তেল পরিমানমতো।
 |
মুরগির কষা মাংস |
প্রণালীঃ মাংস ভাল করে ধুয়ে পেঁপে বাটা মাখিয়ে রাখুন ১ ঘন্টা মতো। এবার মাংসে একে একে রসুন কুচি ,টমেটো কুচি , জিরেবাটা, আদাবাটা,কাশ্মীরী লঙ্কার গুঁড়ো ,লবন, হলুদ, মরিচগুড়ো মাখিয়ে রাখুন আধঘণ্টা মতো। কড়াইতে সরষের তেল দিয়ে খুব গরম হলে তাতে তেজপাতা, গরম মশলা থেঁতো দিয়ে ফোঁড়ন দিন। এরপরে মাখানো মাংস দিয়ে কষতে থাকুন। মাঝে মাঝে নাড়া দিন। মাংস সেদ্ধ হয়ে এলে কাঁচামরিচ ও চিনি দিয়ে আরো কিছুক্ষন রেখে নামিয়ে নিন।
আনারসের চাটনি
উপকরণঃ আনারস ১টি, চিনি ১ কাপ, সরষে ফোড়নের জন্য, লবন স্বাদমতো, তেল ১/২ চা চামচ।আনারস অর্ধেক করে কেটে ভেতর থেকে কুরিয়ে শাঁস বের করে নিন। কড়াইতে অল্প তেল
 |
আনারসের চাটনি |
প্রণালিঃ দিয়ে সরষে ফোড়ন দিন। সরষে ফেটে সুন্দর গন্ধ বেরোলে আনারস, লবন ও অর্ধেক চিনি দিয়ে অল্প জল দিয়ে নেড়েচেড়ে ২০ মিনিট হাল্কা আঁচে রাখুন। আনারস গলে মিশ্রণ আঠালো হয়ে আসতে থাকলে আঁচ বাড়িয়ে বাকি চিনি দিয়ে নাড়তে থাকুন। নাড়তে নাড়তে চিনি গলে গেলে নামিয়ে নিন।
ছানার পায়েস
উপকরণঃ দুধ(১ লিটার), ছানা ২৫০ গ্রাম, চিনি ১০০ গ্রাম, এলাচ ৪টি, পেস্তা বাদাম, কিসমিস পরিমানমতো।
 |
ছানার পায়েস |
প্রণালীঃ প্রথমে মাঝারি উত্তাপে দুধ ভালো করে ফুটিয়ে ঘন করুন। এবার ছানাটাকে ভালো করে মেখে তা থেকে ছোটো ছোটো গোল গোল বল তৈরী করে ফোটানো দুধের মধ্যে ছানার বলগুলি হাল্কা আঁচে ফুটতে দিন। ভালোভাবে ফুটলে এর মধ্যে চিনি ঢালুন ও আস্তে আস্তে নাড়তে থাকুন। এবার এর মধ্যে এলাচ থেঁতো করে দিন ও আরও একটু নাড়ুন। ঘন ঘন হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে কিসমিস পেস্তা বাদাম দিয়ে পরিবেশন করুন।
পানতুয়া
উপকরণঃ ছানা, গোটা এলাচ, নকুলদানা, ঘি ও চিনি।
 |
পানতুয়া |
প্রণালীঃ আগে থেকে আলাদা করে চিনির পাতলা রস ও ঘন রস বানিয়ে রাখুন। দু’টো শিলের মধ্যে নতুন গামছায় মুড়ে ছানা চেপে রাখতে হবে যাতে পুরো জল বেরিয়ে যায়। এবার এলাচের দানা মিশিয়ে ছানা ভাল করে মেখে নিন। ছোট ছোট লেচি করে প্রত্যেকটি লেচির মধ্যে একটি করে নকুলদানা দিয়ে গোল করে হাতের চেটোয় পাকাতে হবে। ঘিয়ে ছানার গোলা ভাজতে হবে যতক্ষণ না লালচে রং আসছে। পরে ভাজা ছানার মণ্ড পাতলা রসে ডুবিয়ে, ঘন রসে ফেলতে হবে।
No comments:
Post a Comment